রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:১৬ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
স্বেচ্ছাসেবক লীগের র‌্যালি থেকে ফেরার পথে ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চরম তাপপ্রবাহ আসন্ন বিপদের ইঙ্গিত দ্বিতীয় ধাপে কোটিপতি প্রার্থী বেড়েছে ৩ গুণ, ঋণগ্রস্ত এক-চতুর্থাংশ: টিআইবি সাড়ে ৪ কোটি টাকার স্বর্ণসহ গ্রেপ্তার শহীদ ২ দিনের রিমান্ডে ‘গ্লোবাল ডিসরাপ্টর্স’ তালিকায় দীপিকা, স্ত্রীর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত রণবীর খরচ বাঁচাতে গিয়ে দেশের ক্ষতি করবেন না: প্রধানমন্ত্রী জেরুসালেম-রিয়াদের মধ্যে স্বাভাবিককরণ চুক্তির মধ্যস্থতায় সৌদি বাইডেনের সহযোগী ‘ইসরাইলকে ফিলিস্তিন থেকে বের করে দাও’ এসএমই মেলার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ইরান ২ সপ্তাহের মধ্যে পরমাণু অস্ত্র বানাতে পারবে!
কেমন ছিল প্রথম বিশ্বকাপ?

কেমন ছিল প্রথম বিশ্বকাপ?

স্পোর্টস ডেস্ক:

প্রতি চার বছর পর পুরো বিশ্বকে উন্মাদনায় মাতাতে আগমন করে ‘দি গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত ফুটবলের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা ফিফা বিশ্বকাপ। দরজায় কড়া নাড়ছে ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপ, অপেক্ষা আর মাত্র কয়েক দিনের। কাতারে অনুষ্ঠিত হওয়া এই বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা ইতিহাসের ২২তম আসর। কেমন ছিল ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাবান প্রতিযোগিতার সর্বপ্রথম আসর?

১৯৩২ অলিম্পিক এর ইভেন্টগুলো থেকে ফুটবলকে বাদ দেয়া হলে ফুটবলের আন্তর্জাতিক একটি প্রতিযোগিতা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন তৎকালীন ফিফা প্রেসিডেন্ট জুলে রিমে। ইতালি, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, হাংগেরি, উরুগুয়ে এই ছয়টি দেশ বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার জন্য ফিফার কাছে আবেদন জানায়। ১৯২৪ ও ১৯২৮ অলিম্পিক ফুটবলের স্বর্ণজয়ী উরুগুয়েকে প্রথম বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে নির্বাচিত করে ফিফা।

বিশ্বকাপ লাতিন আমেরিকার উরুগুয়েতে হওয়ায় যাতায়াত সমস্যার কারণে প্রায় সবগুলো ইউরোপিয়ান দলই বিশ্বকাপ খেলতে আপত্তি জানায়। অপরদিকে বিশ্বকাপে অংশ নেয়ার জন্য আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলো আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। ইউরোপিয়ান চার দেশ বেলজিয়াম, ফ্রান্স, রোমানিয়া ও যুগোস্লেভিয়া, নর্থ আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো এবং লাতিন আমেরিকা থেকে স্বাগতিক উরুগুয়েসহ আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, চিলি, পেরু, প্যারাগুয়ে, বলিভিয়া এই ১৩ দেশ সর্বপ্রথম বিশ্বকাপে অংশ নেয়। ১৯৩০ সালে সাত লাতিন দলের বিশ্বকাপে অংশ নেয়াটা এখন পর্যন্ত একটি নির্দিষ্ট মহাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি দেশের বিশ্বকাপে অংশ নেয়ার রেকর্ড, যা আজও অক্ষত আছে। বিশ্বকাপ ইতিহাসে ১৯৩০ সালের উরুগুয়ে বিশ্বকাপই একমাত্র বিশ্বকাপ যেটাতে কোনো প্রকার বাছাই পর্ব ছাড়াই দলগুলো অংশ নিতে পেরেছিল।

উরুগুয়ের রাজধানী মন্টেভিডিওর তিনটি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বকাপের সব কয়টি ম্যাচ। ১৩টি দলকে চারটি গ্রুপে ভাগ করে দেয়া হয়। গ্রুপ এ তে ছিল আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স, মেক্সিকো এবং চিলি। গ্রুপ বি তে ছিল যুগোস্লেভিয়া, ব্রাজিল, বলিভিয়া। গ্রুপ সি তে স্বাগতিক উরুগুয়ের প্রতিপক্ষ হিসেবে জায়গা পাওয়া বাকি দুই দেশ রোমানিয়া ও বলিভিয়া এবং গ্রুপ ডি তে জায়গা পায় যুক্তরাষ্ট্র, প্যারাগুয়ে ও বেলজিয়াম।

মন্টেভিডিওর এস্তাদিও পোকিতো স্টেডিয়াম ৪ হাজার ৪৪৪ জন দর্শকের উপস্থিতিতে পর্দা উঠে ফুটবল ইতিহাসের সর্বপ্রথম বিশ্বকাপের, অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বপ্রথম ম্যাচ। বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বপ্রথম ম্যাচ খেলার গৌরব অর্জন করে ফ্রান্স এবং মেক্সিকো, যে ম্যাচে ৪-১ গোলে জয় পায় ফ্রান্স।

পয়েন্টের উপর ভিত্তি করে নিজ গ্রুপের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশগুলোকে উত্তীর্ণ হতে হতো সেমি ফাইনালে। এ গ্রুপের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা, বি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয় যুগোস্লেভিয়া, স্বাগতিক উরুগুয়ে সি গ্রুপে সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট পায় এবং পয়েন্টের ভিত্তিতে গ্রুপ ডি এর বাকি দুই দলকে পেছনে ফেলে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে এই চার দল পৌঁছায় সেমি ফাইনালে।

সেমি ফাইনালে আর্জেন্টিনা প্রতিপক্ষ হিসেবে পায় যুক্তরাষ্ট্রকে। উরুগুয়ের বিপক্ষে মুখোমুখি হয় যুগোস্লেভিয়া। যুক্তরাষ্ট্রকে ৬-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছায় আর্জেন্টিনা, আরেক সেমি ফাইনালে যুগোস্লেভিয়াকে ৬-১ গোলে হারায় উরুগুয়ে।

১৯২৮ অলিম্পিক ফুটবলের ফাইনালের পুনরাবৃত্তি ঘটে ১৯৩০ বিশ্বকাপে। ১৯৩০ সালের ৩০ এ জুলাই এস্তাদিও সেন্তেনারিওতে ৬৮ হাজার ৩৪৬ দর্শকের সামনে মুখোমুখি হয় এই দুই দল।

ফাইনালে শেষ হাসি স্বাগতিক উরুগুয়েই হাসে। প্রতিবেশী আর্জেন্টিনাকে হারায় ৪-২ গোলে। উরুগুয়ের হয়ে গোল চারটি করেন দোরাদো, সেয়া, ইরিয়ারতে, ক্যাস্ত্রো। আর্জেন্টিনার হয়ে পেউসেলে এবং স্টাবিলে দুজন একটি করে গোল করলেও নিজ দলের হার এড়াতে পারেনি। ফলে ফুটবল বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম আসরের শিরোপা ঘরে উঠে আয়োজক উরুগুয়েরই ঘরে।

ফিফা বিশ্বকাপের প্রথম আসরে মোট ম্যাচ হয় ১৮টি, গোল হয় ৭০টি এবং সব ম্যাচ মিলিয়ে মোট দর্শক সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৯০ হাজার ৫৪৯ জন। ৮ গোল করে বিশ্বকাপের প্রথম আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড গুইলেরমো স্তাবিলে।

সেই ১৯৩০ থেকে শুরু, এরপর বিশ্বযুদ্ধের সময়গুলো ব্যতীত কখনোই ব্যাহত হয়নি ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজন। শুরু থেকেই জনপ্রিয়তা পাওয়া ফুটবল বিশ্বকাপ সময়ের সাথে সাথে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে হয়েছে বৈশ্বিক। বিশ্বের প্রতিটি দেশের প্রতিটি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বকাপের তুমূল উত্তেজনা। এতো আগ্রহ, এতো উন্মাদনা এসবের উৎপত্তি তো ঘটেছিল উরুগুয়ের মন্টেভিডিও শহরে থেকেই, প্রায় এক শতাব্দী আগে। সিংহভাগ ইউরোপিয়ান দলগুলোর অংশ না নেয়া অথবা এক মহাদেশের অনেক কয়টা দলের অংশ নেয়া- এগুলো কোনোভাবেই প্রথম বিশ্বকাপের মাহাত্ম্য কমাতে পারবে না। কারণ প্রথম কিছু সব ক্ষেত্রেই বিশেষ।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877